সঠিক প্রাইসিং কেন প্রয়োজন?
প্রাইসিং কিন্তু শুধু প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের দাম ঠিক করা না, এর থেকে আরও বেশি কিছু। আসলে এটা আপনার বিজনেসের সাকসেসের মাপকাঠিও বটে। প্রাইসিং এর আরেক নাম হতে পারে আপনার পণ্যের জন্য সঠিক দাম ঠিক করা।
প্রাইসিং থেকে আপনি বের করতে পারবেন পার ইউনিট অথবা পার সার্ভিস আপনার লাভ কত থাকছে।
আর তাছাড়া কোন পণ্য কেনার আগে সবার নজর কিন্তু থাকে প্রাইসের ওপরই। ব্রেকইভেন প্রফিট রেখে যদি আপনি রিজনেবল প্রাইসে প্রোডাক্ট দিতে পারেন, কাস্টমার ডিমান্ড এর পাল্লা আপনার দিকেই ঝুঁকবে।
ভালো প্রাইস আপনার প্রোডাক্টকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। ভালো একটা প্রাইসই নির্ধারণ করবে মানুষ আসলেই সেটা কিনবে কিনা।
প্রাইসিং এর লিমিট থেকে আপনি বুঝতে পারবেন খরচ অথবা কস্ট কেমন হওয়া উচিৎ। ধরুন একটা জিনিসের প্রোডাকশন কস্ট বেশ বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু আপনার টার্গেট মার্কেট এখনো এর জন্য দুটাকাও বেশি খরচ প্রস্তুত নয়। এখানে প্রাইসিং এর ওপর ডিমান্ড নির্ভর করছে। চাইলেই প্রাইস বাড়ানো সম্ভব হবে না।
প্রাইসিং এর ব্রেক ইভেন করে আপনি সহজেই কিছু ফাঁক ফোকর বের করতে পারবেন। সেসব জায়গায় খরচ কমিয়ে ফেলুন । আপনার অফিসে যদি একজন একাউন্টেন্ট থাকেন, তাকে বলুন activity based costing থেকে প্রতিটা কাজের আলাদা খরচটা বের করতে।
ম্যাটেরিয়াল কস্ট, লেবার কস্ট, এডিশনাল কস্ট সবখানে নজর দিন। এরপর একটু পরিবর্তন করলেই প্রোডাকশন কস্ট এর একটা ভারসাম্য চলে আসবে।
কাস্টমার কিনবে কি কিনবে না তা পণ্যের প্রাইসিং নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আর এটাকে কাজে লাগিয়ে যে ভালো বিজনেস স্ট্রাটেজি সেট করা যায় তার একটা উদাহরণ দেই-
- ধরুন আপনি একটি নতুন পানির ব্র্যান্ড বাজারজাত করতে যাচ্ছেন। এর মধ্যেই মার্কেটে রাজত্ব করছে মাম, ফ্রেশ, কিনলে এবং আরো কিছু ব্র্যান্ড। এখন প্রায় সব ইভেন্টে খাবারের সাথে পানির বোতল দেওয়া হয় । আপনি এই ইভেন্ট গুলোকে টার্গেট করতে পারেন, বিভিন্ন রেস্টুরেন্টকেও টার্গেট লিস্টে রাখতে পারেন। বেশি পরিমাণে অর্ডার করলে একই প্রাইসে ফ্রি কাস্টমাইজড লেবেল অফার করতে পারেন । লেবেল ইভেন্টের নাম না রেস্টু্রেন্টের নাম বেশ আকর্ষণীয় একটি অফার। মার্কেট এন্ট্রির জন্য এটা হতে পারে বেশ ভালো স্ট্রাটেজি।
- আরেকটি স্ট্রাটেজি হতে পারে ওয়ান টাইম ইউজেবল বোতল। প্রোডাকশন কস্ট কম, তাই প্রাইস কম রাখতে পারবেন। একজন পথচারী হয়তো পানি কেনার সময় ১৪টাকা-১৫ টাকা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাবেন না। কিন্তু ভেবে দেখুন বড় বড় ইভেন্ট ম্যানেজারদের কথা। তাদের কিন্তু বোতলের স্থায়ীত্বের দরকার নেই। তারা যদি বোতল প্রতি একটাকা কমও পান, অনেক বেশি ইউনিট কেনার ক্ষেত্রে তাদের খরচ অনেক কমে যাবে। এই অফার তারা লুফে নেবেন।
প্রাইসিং ডিসিশনের এর একটা বড় প্রশ্ন হল আপনি কম প্রফিটে বেশি সেলস চান নাকি বেশি প্রফিটে কম সেলস। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রথমটিই বেশি উপযুক্ত। প্রফিট মার্জিন একটু কম রাখুন। মান ঠিক রেখে তুলনামূলক অল্প প্রাইসে প্রোডাক্ট ছাড়ুন। হুহু করে বিক্রি বেড়ে যাবে।
আরও বিজনেস টিপস পেতে সাবস্ক্রাইব করুনঃ jmustafa.com এ।